কৃষি শিক্ষা অ্যাসাইনমেন্ট-১ ৭ম শ্রেণি agriculture studies assignment-1 class 7


 ১.

(ক) বাংলাদেশ নদী, খাল,বিল, হাওর,বাঁওড়ে দেশ। ফলে প্রাকৃতিক ভাবেই মিঠা পানির মাছের বৈচিত্র্য ধন্য এই দেশ। হয়তোবা এই কারণেই বাঙালির খাদ্যতালিকায় মাছ একটি প্রিয় বস্তু। তাই বাংলাদেশের মানুষকে  মাছে ভাতে বাঙালি বলা হয়। 

(খ) একটি সমাজ গঠনে কৃষির ভূমিকাঃ কৃষিকে কেন্দ্র করেই আমাদের পরিবারের সূচনা হয়েছিল। আদিম যুগে মানুষ পশুপাখি শিকার করে অথবা গাছের ফলমূল আহরণ করে খাদ্য সংগ্রহ করত। 

বনের হিংস্র পশু পাখির আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য মানুষ  সবসময়  দলবদ্ধ হয়ে বাস করতো। নারীরা প্রথম আবিষ্কার করল যে বীজ থেকে নতুন চারা হয় এবং সেটি একই রকমের ফল দেয।  একে একে তারা আবিষ্কার করে পশু পাখির মাংস ও গাছের ফল সিদ্ধ করে সুস্বাধু খাবার তৈরীর পদ্ধতি। তখন উৎপাদন ব্যবস্থার কেন্দ্র হয়ে পড়ল নারী। আর একজন কৃষাণী তার পছন্দমতো পুরুষ সঙ্গীকে নিয়ে শুরু করে সংসার। আর এভাবেই সমাজের ক্ষুদ্র একক পরিবারের সূচনা হয।  মানুষ গুহায় থাকা বাদ দিয়ে শুরু করল ঘরবাড়ি তৈরি। এভাবে কিছু পরিবারের ঘরবাড়ি মিলে গ্রামের পত্তন হয়। মানুষ অন্যের চাইতে দক্ষতার পরিচয় দেওয়ায় শ্রম বিভাজন হলো।  তারা নিজেদের প্রয়োজনীয় জিনিস তৈরি করতে থাকলো। আর এভাবেই সবাইকে নিয়ে গঠিত হলো সমাজ। 

(গ) বিভিন্নভাবে সেচের পানির অপচয় হয়।  কিভাবে সেচের পানির অপচয় হয় তা নিচে উল্লেখ করা হলো-

১.বাষ্পীভবন 

২.পানির অনুস্রবন 

৩.পানি চুয়ানো 

বাষ্পীভবনঃ সূর্যের তাপে প্রতিনিয়ত খাল- বিল, নদী -নালা থেকে যেভাবে পানি বাষ্পীভূত হচ্ছে তেমনি ফসলের জমির সেচের পানিও বাষ্পীভূত  হচ্ছে। পানির এই বাষ্পীভবন  রোধ করা কঠিন ব্যাপার। তবে সময় মতো এবং পরিমাণমতো পানি সেচ দিতে হবে যাতে ফসল নিজ প্রয়োজনে  পানি গ্রহণ করতে পারে। 

পানির অনুস্রবনঃ সেচের পানি মাটির স্তর ভেদ করে সোজাসুজি নিচের দিকে চলে যাওয়াকে পানির অনুস্রবন বলা হয়। অনুস্রবনের  মাধ্যমে সেচের পানির অনেক  অপচয় হয়।  সেচের নালায় বা জমিতে  শক্ত স্তর  না থাকলে সহজেই পানির অনুস্রবন ঘটে। অতএব,নালা বা জমিতে শক্ত স্তর   সৃষ্টি করে পানির অনুস্রবন রোধ করা যায়। 

পানি চুয়ানোঃ পানি চুয়ানো পানির অনুস্রবনের অনুরূপ। শুধু পার্থক্য হলো অনুস্রবনের  মাধ্যমে পানি নিচে চলে যায়। আর চুয়ানোর মাধ্যমে পানি অন্য ক্ষেতে   চলে যায়।  অনেক ইঁদুর আইলের এপাশ-ওপাশ গর্ত করে। ইঁদুরের গর্তের মাধ্যমেও পানি চুইয়ে  অন্যত্র চলে যায়। অতএব, শক্ত মাটি দ্বারা এমনভাবে ক্ষেতের আইল ও নালা করতে হবে যেন পানি চুইয়ে  না যায়। জমিতে ইঁদুর যাতে  গর্ত করতে না পারে সে ব্যবস্থা করতে পারলে পানি চুয়ানো কমে যাবে। 

বৃত্তাকার সেচ পদ্ধতিতে ফল গাছের গোড়ায় সেচ দেওয়া হয় এবং ফোয়ার সেচ পদ্ধতিতে শাকসবজির ক্ষেতে সেচ দেওয়া হয় । 

রুট স্টকঃ জোড়া কলমের ক্ষেত্রে অনুন্নত যে গাছের সঙ্গে জোড়া লাগানো হবে সে গাছটিকে রুটি স্টক বলে। 

 সায়নঃ জোড়া কলমের ক্ষেত্রে যে অঙ্গে উন্নত জাতের গাছের স্টকের সঙ্গে লাগানো হবে তাকে বলা হয় সায়ন। 

(ঘ) জমিতে যেকোনো সবুজ উদ্ভিদ জন্মিয়ে কচি অবস্থায় চাষ করে মাটিতে মিশিয়ে যে সার প্রস্তুত করা হয় তাকে সবুজ সার বলে। ২ টি সবুজ সারের নাম-

১. ধইঞ্চা সার

২. গোমটর সার

সৃজনশীল প্রশ্নঃ

২.

(ক) সিয়ামের টবে আয়রন(লৌহ)পুষ্টি উপকরণের অভাব ঘটেছে। ব্যাখ্যা করা হলো-  

অায়রন(লৌহ)পুষ্টি উপাদানের   অভাব জনিত লক্ষণসমূহ নিচে উল্লেখ করা হলোঃ

১.কচি পাতার সবুজ রং বিবর্ণ হয়।

২. প্রথমে পাতা দুই  শিরার মাঝখানে বিবর্ণ হয়ে সমগ্র পাতায় তা ছড়িয়ে পড়ে। 

৩.গাছ খর্বাকৃতির হয়।

৪. সয়াবিন, কমলালেবু ও সবজি জাতীয় পাতায় পচন ধরে।

৫. ধানের বীজতলায় চারার নতুন পাতা হলুদ হয়ে যায়।

উদ্দীপকে  সিয়াম তার বাড়িতে মরিচ গাছ চাষ করে।  মরিচ গাছগুলো বাড়ার সাথে সাথে গাছের পাতার রং বিবর্ণ হয়ে সমগ্র পাতায়  ছড়িয়ে পড়ে। 

সুতরাং বলা যায,  সিয়ামের টবে আয়রন(লৌহ)  উপকরণের অভাব ঘটেছে।  


(খ) সিয়ামের চাচার পরামর্শ মূল্যায়ন করা হলোঃ উদ্দীপকে  সিয়াম তার বাড়িতে মরিচ গাছ চাষ করে।  মরিচ গাছগুলো বাড়ার সাথে সাথে গাছের পাতার রং বিবর্ণ হয়ে সমগ্র পাতায়  ছড়িয়ে পড়ে। এ অবস্থা দেখে সিয়ামের চাচা পরিমিত মাত্রায় সার প্রয়োগের পরামর্শ দেন।সিয়াম তার চাচার পরামর্শ মেনে মরিচ ক্ষেতে পরিমিত মাত্রায় ইউরিয়া,এমওপি,  টিএসপি, জিপসাম ইত্যাদি রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে পারে।  এর ফলে সিয়ামের মরিচ গাছে অায়রন(লৌহ) পুষ্টি উপাদানের অভাব পূরণ হবে এবং নিচের উন্নতি ও পরিবর্তনগুলো   দেখা যাবে।

১. মরিচ গাছে সবুজ কণিকা( ক্লোরোফিল ) গঠিত হবে। 

২. বীজ উৎপাদন ভালো হবে। 

৩. ফসলের গুণগত মান বাড়বে। 

৪. মরিচের ফলন বৃদ্ধি পাবে। 

৫.মরিচের শিকড় বৃদ্ধি পাবে। 

সুতরাং বলা যায়, সিয়ামের চাচার সার প্রয়োগের পরামর্শ যুক্তিযুক্ত। 

 

Comments

Popular posts from this blog

অ্যাসকি কোড( ASCII Code) আইসিটি এইচএসসি একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি

Cu2+ আয়ন শনাক্তকরণ

ত্রিভুজ ABC এর কোণ A এর সমদ্বিখণ্ডক BC কে D বিন্দুতে ছেদ করে। BC এর সমান্তরাল কোনো রেখাংশ AB ও AC কে যথাক্রমে E ও F বিন্দুতে ছেদ করে। প্রমাণ কর যে, BD:DC=BE:CF.