ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা assignment class 7
- Get link
- Other Apps
গ. জনাব 'ক' এর মধ্যে আখলাকে হামিদাহর শালীনতাবোধ গুনটি বিদ্যমান। ব্যাখ্যা করা হলোঃ উদ্দীপকে জনাব 'ক' নিয়মিত মার্জিত বেশভূষায় অফিসে আসা যাওয়া করেন। সহকর্মী ও সেবাগ্রহণকারী সবাই তার ব্যবহারে মুগ্ধ।
আচার আচরণে, কথাবার্তায়, বেশভূষায় ও চালচলনে মার্জিত পন্থা অবলম্বন করাকে শালীনতা বলে। শালীনতা মানুষের একটি মহৎ গুণ। এটির গুরুত্ব অপরিসীম। শালীনতাবোধ মানুষকে অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে। শালীনতা আল্লাহর অনুগত বান্দা হতে সাহায্য করে। আচার-ব্যবহারে শালীন ব্যক্তিকে সবাই পছন্দ করে। শালীন পোষাক পরিচ্ছদ সৌন্দর্যের প্রতীক।শালীন ও ভদ্র আচরণের মাধ্যমে বন্ধুত্ব ও হৃদ্যতা সৃষ্টি হয়। সমাজকে সুন্দর ও সুশৃংখল রাখতে শালীনতার প্রয়োজন সর্বাধিক। শালীনতাপূর্ণ আচার-ব্যবহার সম্প্রীতি ও সৌহার্দের চাবিকাঠি।অশোভন বা অশালীন পোশাক পরিচ্ছদ ও আচরণ অনেক সময় সমাজে বিপর্যয় ডেকে আনে, সমাজে অশান্তির সৃষ্টি করে। নৈতিক চরিত্রের অবক্ষয় ঘটায়।মহানবী (স.) বলেন, 'মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তি সবচেয়ে নিকৃষ্ট, যার অশ্লীলতা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য লোকেরা তাকে পরিত্যাগ করে। ' (বুখারী) অশালীন ব্যক্তিকে আল্লাহ তায়ালা কখনোই পছন্দ করেন না। বরং অশালীন ব্যক্তিকে আল্লাহ তায়ালা ঘৃণা করেন। এ সম্পর্কে মহানবী ( স.) এর বাণীঃ'নিঃসন্দেহে আল্লাহ তায়ালা অশালীন ও দুশ্চরিত্র ব্যক্তিকে ঘৃণা করেন। '(তিরমিযি)
সুতরাং বলা যায়, জনাব 'ক' এর মধ্যে আখলাকে হামিদাহর শালীনতাবোধ গুনটি বিদ্যমান।
ঘ. জনাব 'খ' এর কার্যক্রমটি হচ্ছে সৃষ্টির সেবা। পাঠ্যবইয়ের আলোকে বিশ্লেষণ করা হলোঃ উদ্দীপকে জনাব 'ক' এর সহকর্মী জনাব 'খ' তার এলাকার অসুস্থ পীড়িত পশুপাখি, বিরান বিপন্ন গাছগাছালির পরিচর্যার জন্য একটি বহুমুখী ইনস্টিটিউশন পরিচালনা করেন । ইসলামী পরিভাষায় আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি দয়া ও সহানুভূতিশীল হয়ে আদর যত্ন করা নামই হলো সৃষ্টির সেবা। মহান আল্লাহ এই সুন্দর পৃথিবীতে মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাত তথা সৃষ্টির সেরা করে পাঠিয়েছেন। আর সৃষ্টিকুলের সব কিছু যেমন - জীবজন্তু, পশুপাখি, কীটপতঙ্গ, পাহাড়-পর্বত, গাছপালা ইত্যাদি মানুষের উপকারের জন্য সৃষ্টি করেছেন। সুতরাং এসব সৃষ্টির প্রতি সহানুভূতি দেখানো এবং এগুলোর যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণ করা অবশ্য কর্তব্য।
যে সৃষ্টির প্রতি দয়া ও সহানুভূতি প্রদর্শন করে, আল্লাহ তার প্রতি খুশি হয়ে রহমত বর্ষণ করেন। এ সম্পর্কে মহানবী(স.) বলেন, 'তোমরা জমিনের অধিবাসীদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করবে। তাহলে আসমানের অধিপতি মহান আল্লাহ তোমাদের প্রতি দয়া করবেন।'( তিরমিযি)
পৃথিবী ও এই মহাবিশ্বে যা কিছু আছে তা সবই আল্লাহর সৃষ্টি। সৃষ্টিকুলের প্রতি এ দায়িত্ব পালন করার নাম সৃষ্টির সেবা।
মানুষের ওপর প্রধানত দুই ধরনের কর্তব্য রয়েছে। প্রথমত স্রষ্টার প্রতি কর্তব্য, তারপর সৃষ্টির প্রতি কর্তব্য। সৃষ্টির প্রতি সদয় হলে এবং এদের লালন-পালন ও রক্ষণাবেক্ষণ করলে আল্লাহ খুশি হন। তেমনি এদের প্রতি অবহেলা করলে, নিষ্ঠুর আচরণ করলে, আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন। এ সম্পর্কে মহানবী (স.) এর হাদিস হলো- 'সমগ্র সৃষ্টিজগৎ আল্লাহর পরিবার, আল্লাহর কাছে সেই ব্যক্তিই প্রিয়, যে তার পরিবারের প্রতি অনুগ্রহ করেন।'
সমাজে কোনো ব্যক্তি পীড়িত হলে তার সেবা করতে হবে। ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রিয় নবী(স.) বলেছেন, 'যে মুসলমান অন্য মুসলমান ভাইয়ের অভাব মোচন করে আল্লাহ তায়ালা তার অভাব দূর করেন।'(মুসলিম) প্রিয় নবী(স.) আরো বলেন, 'বনি ইসরাইলের এক পাপী মহিলা একটি তৃষ্ণার্ত কুকুরকে পিপাসায় কাতর দেখে পানি পান করায়। এতে আল্লাহ তায়ালা ঐ মহিলার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে তাকে ক্ষমা করে দেন।'(বুখারী ও মুসলিম) জীবজন্তুর মতো উদ্ভিদের প্রতিও সদয় হতে হবে।
সুতরাং বলা যায়, জনাব 'খ' এর কার্যক্রমটি হচ্ছে সৃষ্টির সেবা।
- Get link
- Other Apps
Comments
Post a Comment